You are currently viewing ফ্রিলান্সারের নতুন বছরের, প্রফেশনাল লক্ষ্য নির্ধারণ

ফ্রিলান্সারের নতুন বছরের, প্রফেশনাল লক্ষ্য নির্ধারণ

নতুন বছর ২০২৩ শুরু হয়ে গেল। নতুন বছরে, নিতে হবে নতুন পরিকল্পনা, নতুন লক্ষ্য, আসবে নিত্য নতুন সম্ভবনা। নতুন বছরে আপনার প্রফেশনাল লক্ষ্য কি ঠিক করেছেন? অনেকেই হয়ত ঠিক করে ফেলেছেন, অনেকেই হয়ত করবেন। কিন্তু মজার ব্যাপার কি জানেন? আমাদের বেশির ভাগেরই কোন প্রফেশনাল লক্ষ্য নেই। হারভার্ড বিজনেস স্টাডির এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, আমাদের ৮৩% মানুষেরই কোন গোল বা লক্ষ্য নেই। ১৪% মানুষের লক্ষ্য আছে কিন্তু সেটা কোথাও লেখা নেই এবং তাদের স্পেসিফিক কোন প্লানও রেডি নেই। মাত্র ৩% মানুষ তাদের গোল লিখে রাখে এবং তাদের প্লান রেডি আছে। তাদের স্টাডি থেকে জানা যায় এই ১৪% মানুষ যাদের প্লান রেডি আছে তারা সেই ৮৩% মানুষ থেকে ১০ গুন বেশি সফলতা অর্জন করেন। যেই ৩% মানুষ তাদের গোল লিখে রাখেন তারা এই ১৪% মানুষের থেকে ৩ গুন বেশি সফল।
আসলে আপনি যখন কোন কিছু লিখে রাখবেন তখন অবচেতন ভাবে সেটা আমাদের এক ধরনের রিমাইন্ডার দেয়। ফলে ভেতর থেকে আমারা একটা তাড়না অনুভব করি। অনেকেই মনে করতে পারেন যে, একটা কাগজে গোল লিখে রাখলেই হল? ব্যাপারটি আসলে তা নয়। সাধারণ গোল নিয়ে কাজ না করে স্মার্ট (SMART) গোল নিয়ে কাজ করতে হবে। আর তাহলেই সাফল্য ধরা দেবে। এখন প্রশ্ন আসতে পারে এই SMART জিনিসটা আবার কি? নিচের ডায়াগ্রাম লক্ষ্য করুন। আশা করি বিষয়টা ক্লিয়ার হয়ে যাবে। আপনার লক্ষ্য নির্ধারণের সময় এই শর্তগুলো প্রযোজ্য কিনা সেটা দেখুন।
S=Specific (লক্ষ্য হবে সুনিদ্দিস্ট কে, কি, কোথায়, কখন, কোনটা, কেন)
M=Measurable ( আপনার কাজের অগ্রগতি অবশ্যই পরিমাপ করা যেতে হবে। নিয়মিত অগ্রগতি ট্রাক করতে হবে)
A= Attainable (লক্ষ্য অবশ্যই অর্জনযোগ্য হতে হবে, অর্জন করা না গেলে সেটা লক্ষ্য হিসাবে নির্ধারণ করা যাবে না। বড় কোন লক্ষ্য অর্জন করার জন্য, আপনার স্কিল ডেভেলপ করুন, মানসিকতার পরিবর্তন করুন। প্লান রেডি করুন )
R= Realistic (লক্ষ্য বাস্তব সম্মত হতে হবে, লক্ষ্য অর্জনের ইচ্ছা এবং যোগ্যতা থাকতে হবে)
T=Timely (লক্ষ্য অর্জনের জন্য অবশ্যই নিদিষ্ট সময় এবং তারিখ নিধারিত থাকতে হবে)
আপনার লক্ষ্যের সাথে যদি উপরের সব কিছু মিলে যায় তবে অবশ্যই সেটাকে লক্ষ্য হিসাবে নির্ধারণ করতে পারবেন। আরও সংক্ষেপে যদি বলি, সেটা হচ্ছে, আপনার লক্ষ্য অবশ্যই সুনিদ্দিস্ট হতে হবে। আপনার লক্ষ্য অর্জনের আগ্রগতি অবশ্যই ট্রাক করতে হবে। আপনার লক্ষ্য অবশ্যই বাস্তব সম্মত হতে হবে এবং সেটা অর্জনের যোগ্যতা থাকতে হবে। লক্ষ্য অর্জনের জন্য নিদিষ্ট সময় নির্ধারণ করতে হবে। আর এভাবেই SMART লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হয়।  লক্ষ্য অর্জনের সুবিধার জন্য, আপনার বড় লক্ষ্যটাকে আরও ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে নিতে পারেন । বছরটাকে ৪ ভাগে ভাগ করে, প্রতি কোয়ার্টারে (৩ মাসে ১ কোয়ার্টার) বড় লক্ষ্যটাকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে নিতে পারেন। যেমন ২০২৩ সালে আপনি হয়ত ব্যাংকে ১০ লক্ষ টাকা জমাতে চান। সেই ক্ষেত্রে প্রতি ৩ মাসে ২.৫ লক্ষ করে ১২ মাসে ১০ লক্ষ টাকা নির্ধারণ করেন। এবং সেভাবে চেষ্টা করেন অর্জন করার। ছোট লক্ষ্য অর্জন করতে পারলে, নিজেকে পুরস্কৃত করুন। না করতে পারলে নিজেকে শাস্তি দিন, পরের কোয়ার্টারে বেশি কাজ করে পুষিয়ে দিন। আশা করা যায় বছর শেষে আপনার লক্ষ্য থেকেও বেশি টাকা জমাতে পারবেন।
পাশাপাশি নিজের লক্ষ্য অর্জনের জন্য, স্কিল এবং সক্ষমতা ডেভেলপ করতে হবে। আর লক্ষ্য অর্জনের জন্য অবশ্যই একটা প্লান রেডি করতে হবে। আপনার প্লান লিখে রাখবার জন্য ইয়ারলি প্লানার ইউজ করতে পারেন দরকার হলে মাইন্ড ম্যাপিং করতে পারেন এর জন্য অনেক সফটওয়্যার আছে যেমন Gitmind । যেটা আপনার টেবিলের উপর থাকবে বা আপনার সামনে নোটিশ বোর্ডেও থাকতে পারে। আপনি আপনার লক্ষ্য নির্ধারণ করার জন্য এই ডায়াগ্রামের পাশাপাশি আমার এই চিটশিট (লিংক প্রথম কমেন্টে) ইউজ করতে পারেন। আশা করি খুব সহজেই আপনার SMART গোল রেডি করে ফেলতে পারবেন।
সব শেষে বলতে চাই। সাফল্য কোন নিদিষ্ট গন্তব্য নয়। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। সাফল্য অর্জনের জন্য, লেগে থাকতে হবে, সাথে দরকার ধৈর্য আর পরিশ্রম। আপনার লক্ষ্য বা স্বপ্ন, অন্যকে বলে বেড়াবার কোন দরকার নেই। সেটা বাস্তবায়ন করে সবাইকে দেখিয়ে দিন।  নতুন বছর সবার জন্য সাফল্য বয়ে নিয়ে আসুক, আপনার সব লক্ষ্য পূরণ হোক, এই কামনা করি।
ধন্যবাদ!

Leave a Reply